এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্রাজিল কলম্বিয়া, লিবিয়া ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে যাচ্ছে, যারা ইতোমধ্যেই মামলায় হস্তক্ষেপ করেছে অথবা প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত হেগের আইসিজে-তে মামলাটি দায়ের করে। এতে অভিযোগ করা হয়, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ১৯৪৮ সালের "গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন" লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েল এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে আসছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি, মার্চ ও মে মাসে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে জানায়, গাজায় সামরিক অভিযান পরিচালনার সময় ইসরায়েলকে অবশ্যই “গণহত্যা প্রতিরোধে” প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। এর মধ্যে মানবিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ ও দুর্ভিক্ষ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনাও রয়েছে।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গাজায় বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে নির্বিচারে সহিংসতা চালানো হচ্ছে এবং ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চলমান এই বর্বরতা ও মানবিক সংকটের মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধের সূচনা ঘটে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ইসরায়েলে চালানো এক প্রাণঘাতী হামলার মাধ্যমে। এরপর থেকে ইসরায়েল প্রতিশোধমূলকভাবে গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো একাধিকবার সতর্ক করেছে, গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে, যা "দুর্ভিক্ষের কাছাকাছি" অবস্থায় পৌঁছেছে। বুধবার ইসরায়েল গাজায় ইচ্ছাকৃতভাবে খাদ্য সংকট তৈরি করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা একাধিকবার গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডকে “গণহত্যা” হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা আন্তর্জাতিকভাবে জোরালো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী, কোনো জাতীয়, জাতিগত, বর্ণগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত পাঁচটি নির্দিষ্ট অপরাধকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়—যার মধ্যে হত্যাকাণ্ড, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, জীবনধারণের অযোগ্য পরিস্থিতি সৃষ্টি, জবরদস্তিমূলক জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং শিশু অপসারণ অন্তর্ভুক্ত।
0 মন্তব্যসমূহ