ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে গ্রেফতার বা গ্রেফতারে সহায়ক তথ্য প্রদানকারীর জন্য পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক ভিডিও বার্তায় ওয়াশিংটন মাদুরোকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মাদক পাচারকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে। খবর—বিবিসি।
মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি জানান, মাদুরোর বিরুদ্ধে পূর্বে ধার্য আড়াই কোটি ডলারের আর্থিক পুরস্কার দ্বিগুণ করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ভেনেজুয়েলাভিত্তিক অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাহুয়া এবং মেক্সিকোর শক্তিশালী সিনলোয়া কার্টেল-এর সঙ্গে মাদুরোর সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য, ত্রেন দে আরাহুয়াকে ইতোমধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বন্ডি দাবি করেন, সম্প্রতি মার্কিন মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ডিইএ প্রায় ৩০ টন কোকেন জব্দ করেছে, যার মধ্যে প্রায় সাত টন সরাসরি মাদুরোর সঙ্গে এবং বাকিটা তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সঙ্গে যুক্ত।
অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউভান গিল। তিনি বলেন, “আমরা এতে বিস্মিত নই। যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইন কেলেঙ্কারির মতো ইস্যু থেকে মনোযোগ সরাতেই হোয়াইট হাউজ এই নাটক সাজাচ্ছে।”
দীর্ঘদিন ধরেই মাদুরোর কঠোর সমালোচক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভেনেজুয়েলার সর্বশেষ নির্বাচনে মাদুরোর ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা চলছে। নির্বাচন ঘিরে কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে, যার ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
প্রথম প্রেসিডেন্ট মেয়াদ থেকেই মাদুরোসহ ভেনেজুয়েলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মাদক সন্ত্রাস, পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তোপ দেগেছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন বিচার বিভাগ সে সময় দাবি করেছিল, মাদুরো কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্ক-এর সঙ্গে জোট বেঁধে কোকেনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রকে মাদকে ছেয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
তবে মাদক পাচারের সব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন প্রেসিডেন্ট মাদুরো। ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বৈরী সম্পর্কের প্রেক্ষাপটেই পুরস্কারের এই ঘোষণা এসেছে। যদিও অ্যাটর্নি জেনারেল বন্ডি স্পষ্ট করে বলেননি, পুরস্কার বৃদ্ধি কীভাবে ওয়াশিংটনের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল এনে দেবে।
0 মন্তব্যসমূহ