আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ব্রাজিল বাংলা টিভি | ২১ অক্টোবর ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোর মধ্যে চলমান কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরই জেরে কলম্বিয়া যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেছে।
সোমবার কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল গার্সিয়া পেনা-কে পরামর্শের জন্য বোগোটায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীর মূল্যায়ন প্রয়োজন। কলম্বিয়া তার সার্বভৌম স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।”
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে সহায়তা বন্ধ ও নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় কলম্বিয়া সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়।
রোববার ট্রাম্প এক বক্তৃতায় কলম্বিয়াকে “অবৈধ মাদক নেতা” বলে সমালোচনা করেন এবং দেশটিতে মাদক চাষ বন্ধে “শক্ত পদক্ষেপ” নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, যদি পেত্রো সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র “নিজ উদ্যোগে বিকল্প পদক্ষেপ” নেবে।
কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর্মান্ডো বেনেদেত্তি ট্রাম্পের বক্তব্যকে “কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ বা সামরিক পদক্ষেপের হুমকি” বলে উল্লেখ করেন।
দুই দেশের মধ্যে এই বিরোধের সূত্রপাত জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মাদকবিরোধী সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ওয়াশিংটন আগস্ট মাস থেকে দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে এবং কমপক্ষে সাতটি নৌযান আটক করেছে, যা মার্কিন প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী মাদক পাচারে ব্যবহৃত হচ্ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, এসব অভিযানে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে, যদিও এর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, কলম্বিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক সংকট দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সম্পর্ককে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।
মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে “বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ” উঠেছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অবৈধ বলে বিবেচিত হবে, এমনকি যদি লক্ষ্যবস্তু মাদক পাচারকারীরাও হয়।
সূত্র: AFP, Reuters, Al Jazeera, The Guardian

0 মন্তব্যসমূহ