আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রাজিল
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কৃষি উৎপাদনকারী দেশ ব্রাজিল বর্তমানে গরুর মাংস রপ্তানিতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৪ সালে দেশটি প্রায় ২.৮৯ মিলিয়ন টন গরুর মাংস রপ্তানি করেছে, যার আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগের বছরের তুলনায় এ আয় ও রপ্তানির পরিমাণ যথাক্রমে ২২% ও ২৬% বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধান ক্রেতা দেশসমূহ
ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন, যারা মোট রপ্তানির প্রায় ৬০–৬৫% মাংস আমদানি করে। ২০২৪ সালে চীন একাই প্রায় ১.৩৩ মিলিয়ন টন ব্রাজিলীয় গরুর মাংস কিনেছে, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় বৃহৎ বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যারা প্রায় ২,২৯,০০০ টন মাংস আমদানি করেছে, যার আর্থিক মূল্য ১.৩৫ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া চিলি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং ও মিশরও উল্লেখযোগ্য আমদানিকারক দেশ।
মান ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা
২০২৫ সালে বিশ্ব পশু স্বাস্থ্য সংস্থা (WOAH) ব্রাজিলকে “Foot-and-Mouth Disease (FMD)-মুক্ত দেশ” হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিশেষ বিষয় হলো, ব্রাজিল এই স্বীকৃতি পেয়েছে ভ্যাকসিন ব্যবহার ছাড়াই। এর ফলে ইউরোপ ও এশিয়ার উন্নত বাজারে ব্রাজিলীয় মাংসের প্রবেশ আরও সহজ হয়েছে।
নতুন বাজারের লক্ষ্য
চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে ব্রাজিল সরকার ও বেসরকারি খাত এখন নতুন বাজারের দিকে নজর দিচ্ছে। জাপান, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া ও তুরস্ককে পরবর্তী সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৫ সালে ব্রাজিলের রপ্তানি ৩.৬–৩.৭ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে।
বৈশ্বিক স্বীকৃতি ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ
ব্রাজিলের নেলোর জাতের উন্নত গবাদিপশু বিশ্বজুড়ে সুনাম কুড়িয়েছে। তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, ব্যাপক গবাদি পশু খামারের কারণে আমাজন অঞ্চলে বন উজাড় বাড়ছে, যা পরিবেশের জন্য গুরুতর হুমকি। এই কারণে ইউরোপের কিছু সুপারমার্কেট ইতোমধ্যেই ব্রাজিলীয় মাংস থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
উপসংহার
সর্বোপরি, গরুর মাংস রপ্তানিতে ব্রাজিল আজ বিশ্বনেতা। স্বাস্থ্য সনদ, মান নিয়ন্ত্রণ ও নতুন বাজারে প্রবেশের কৌশল দেশটির অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করছে। তবে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও টেকসই উৎপাদন বজায় রাখা আগামী দিনের প্রধান শর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
📌 হ্যাশট্যাগ
#BrazilBeef #MeatExport #GlobalTrade #ChinaMarket #BrazilEconomy #SustainableFarming #WorldFoodMarket
0 মন্তব্যসমূহ