মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উস্কানি ও নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা (ওয়ার্কার্স পার্টি) বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সরাসরি জবাব দেন। পার্নাম্বুকোর রেসিফেতে ৫৯৯টি জমির মালিকানা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বহিরাগত চাপের মুখে ব্রাজিল কোনোভাবেই “হাঁটু গেড়ে বসবে না।”
লুলা মন্তব্য করেন:
“মার্কিন সরকার ব্রাজিল সম্পর্কে মিথ্যা ছড়াচ্ছে। যখন বলা হয় আমরা খারাপ বাণিজ্যিক অংশীদার, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ব্রাজিল একটি শক্তিশালী দেশ এবং কারও কাছে নতজানু হবে না। একজন পার্নাম্বুকোর অধিবাসী হিসেবে আমি লড়াই পছন্দ করি না, তবে আমি কখনো ভয় পাই না।”
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে উত্তেজনা
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত মাসে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব ব্রাজিলীয় রপ্তানির উপর ৫০% শুল্ক আরোপ করা হবে। ব্রাজিল সরকার এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জানায়, গত ১৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের সঙ্গে বাণিজ্য থেকে প্রায় ৪১০ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে, যার একটি বড় অংশ এসেছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে।
বলসোনারো প্রসঙ্গে লুলা
লুলা সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর কঠোর সমালোচনা করে বলেন, তিনি বর্তমানে সুপ্রিম ফেডারেল কোর্টে (STF) বিচারাধীন, কারণ তিনি গণতন্ত্রকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষ্য অনুযায়ী, বলসোনারো অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিলেন এবং ভয়াবহ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে—
লুলা, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ডো অ্যালকমিন ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের বিরুদ্ধে হত্যার পরিকল্পনা,
ব্রাসিলিয়ায় বিমানবন্দরে ট্রাক বোমা ব্যবহারের প্রচেষ্টা,
রাষ্ট্রপতির শপথ অনুষ্ঠানের দিন ফেডারেল পুলিশের উপর আক্রমণ,
বাস পোড়ানো,
এবং ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি সরকারের তিন শাখার সদর দপ্তরে হামলা উস্কে দেওয়া।
লুলার বক্তব্য স্পষ্ট করেছে যে ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে মাথা নত করবে না। একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন—গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনাই বর্তমান সরকারের প্রধান অঙ্গীকার।
0 মন্তব্যসমূহ