Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বলসোনারো সাও পাওলোর পাউলিস্তা অ্যাভিনিউতে ৮ জানুয়ারির বন্দিদের জন্য সাধারণ ক্ষমার দাবিতে সমাবেশ করছেন



ব্রাজিল বাংলা টিভি ডেস্ক:  সাবেক ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো (PL) রবিবার (৬ এপ্রিল) আবারও রাস্তায় নেমে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারির ঘটনায় গ্রেফতার ও দণ্ডপ্রাপ্তদের সাধারণ ক্ষমার দাবিতে একটি সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। প্রায় এক মাস আগে তিনি রিও ডি জেনেইরোর কপাকাবানা সৈকতে সমর্থকদের নিয়ে একটি সমাবেশ করেন। এবার সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাও পাওলো শহরের প্রাণকেন্দ্র পাউলিস্তা অ্যাভিনিউতে, দুপুর ২টায়।

এই সমাবেশে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে মিনাস জেরাইসের গভর্নর রোমেউ জেমা (Novo) এবং সাও পাওলো রাজ্যের গভর্নর তারসিসিও দে ফ্রেইতাস (Republicanos)-এর। এছাড়াও, PL দলের রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ের সংসদ সদস্যরা এবং রিপাবলিকানোস দলের সিনেটর ক্লেইতিনহো-ও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ৮ জানুয়ারির ঘটনায় জড়িতদের জন্য সাধারণ ক্ষমা চাওয়া। আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে থাকবে কেশচর্চা পেশার সঙ্গে যুক্ত দেবোরা রদ্রিগেজ-এর মামলাও, যিনি ওই দিনে "ন্যায়বিচার" ভাস্কর্যে লিপস্টিক দিয়ে “Perdeu, mané” (হারলে, বোকা) লেখেন। তার মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি, সুপ্রিম ফেডারেল কোর্টের (STF) বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরাস, তার ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানার সুপারিশ করেছেন।

এই সমাবেশ ডানপন্থী রাজনৈতিক জোট ও বলসোনারোর ঘনিষ্ঠ নেতাদের একত্রিত করছে এবং ৮ জানুয়ারির বন্দিদের প্রতি তাদের সমর্থনকে দৃঢ় করছে।

🔎 রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছিল, তা ছিল একটি চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক সহিংসতা, যেখানে বলসোনারোর সমর্থকরা কংগ্রেস, প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনে হামলা চালায়। তারা তৎকালীন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার বিজয় মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এই সহিংসতা চালায়।

এই ঘটনার মাধ্যমে ব্রাজিলে গভীর রাজনৈতিক বিভাজন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি অশ্রদ্ধা সামনে আসে। অনেকেই একে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ৬ জানুয়ারির ঘটনার ব্রাজিলীয় সংস্করণ হিসেবে দেখেছেন।

এরপর বহু লোককে গ্রেফতার করা হয়, যাদের মধ্যে অনেকেই সাধারণ নাগরিক—কিন্তু এমন কাজের জন্য কঠোর শাস্তি দাবি উঠেছে। আবার বলসোনারোর ঘনিষ্ঠ মহল এই শাস্তিকে রাজনৈতিক প্রতিশোধ বলেই দাবি করছে।


🧭 এই সমাবেশের রাজনৈতিক তাৎপর্য

বলসোনারো বর্তমানে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ, এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তিনি এই ধরনের সমাবেশের মাধ্যমে:

  1. নিজের প্রভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন;

  2. ডানপন্থী রাজনৈতিক ঘাঁটি শক্তিশালী করছেন;

  3. জনগণের সহানুভূতি আদায় করতে চাইছেন, দেখাতে চাইছেন এই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত;

  4. এবং সর্বোপরি, আনুষ্ঠানিকভাবে “ভিকটিম” বা নিপীড়িত ভাবমূর্তি তৈরি করছেন


🌍 তুলনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি: বিশ্বজুড়ে অনুরূপ ঘটনা

দেশঘটনামূল চরিত্রলক্ষ্য
🇺🇸 যুক্তরাষ্ট্র৬ জানুয়ারি ২০২১, ক্যাপিটল হিলে হামলাট্রাম্প সমর্থকরাবাইডেনের জয় প্রত্যাখ্যান
🇩🇪 জার্মানি২০২২, পার্লামেন্ট ভবনে চরমপন্থীদের হামলার চেষ্টাডানপন্থী ষড়যন্ত্রবাদীরাসরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র
🇧🇷 ব্রাজিল৮ জানুয়ারি ২০২৩বলসোনারো সমর্থকরালুলার সরকারকে অস্বীকার ও বিচার বিভাগের ওপর হামলা



এই ধরণের আন্দোলন ও সমাবেশগুলো গণতন্ত্রের জন্য একটি বিপজ্জনক সঙ্কেত, যেখানে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে অস্বীকার করা হয়। বলসোনারো, ট্রাম্প প্রমুখ নেতারা সরাসরি না বললেও নীরব সম্মতি ও প্ররোচনার মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।

৮ জানুয়ারির বন্দিদের জন্য সাধারণ ক্ষমার দাবি একদিকে মানবিক আবেদন হলেও, অন্যদিকে এটি গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ