আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ ভাহিদিকে এই হামলার অন্যতম মূল পরিকল্পনাকারী বলে অভিযুক্ত করেছে। অভিযোগ রয়েছে, ১৯৯৩ সালের এক গোপন বৈঠকে তিনি এই হামলার সিদ্ধান্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের বিবৃতি
রবিবার রাষ্ট্রপতি হাভিয়ের মিলেই-এর কার্যালয় এক বিবৃতিতে ভাহিদির নিয়োগকে “অগ্রহণযোগ্য উসকানি” আখ্যা দিয়েছে এবং ইসরায়েলের উপর ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলারও নিন্দা জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো এই বর্বর হামলা নিন্দনীয়।”
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে আহমেদ ভাহিদি ২০০৭ সাল থেকে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের আওতায় রয়েছেন এবং AMIA হামলার জন্য আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত। প্রয়াত প্রসিকিউটর আলবার্তো নিসমানের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ১৯৯৪ সালের ওই হামলার অনুমোদনে যে ইরানি নেতৃত্ব জড়িত ছিল, ভাহিদি ছিলেন তার অন্যতম মুখ্য ব্যক্তি।
ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা ও আঞ্চলিক উদ্বেগ
সম্প্রতি ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান ইসমাইল ঘানি এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা নিহত হন। এরপর ভাহিদিকে অন্তর্বর্তী কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং বিপ্লবী গার্ড আরও বড় ধরনের প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে।
আর্জেন্টিনার বিচারিক অবস্থান
বিবৃতিতে বলা হয়, ভাহিদির নিয়োগ শুধু আর্জেন্টিনার জন্য নয়, বরং সন্ত্রাসবাদবিরোধী এবং ন্যায়বিচারকামী সব জাতির জন্যই অবমাননাকর। AMIA হামলায় নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আর্জেন্টিনা মামলার আসামিদের বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছে।
গত বছর আর্জেন্টিনার আদালত ১৯৯৪ সালের AMIA এবং ১৯৯২ সালের ইসরায়েলি দূতাবাসে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে। আদালত হামলাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে, যা সময়ের সীমাবদ্ধতার আওতায় পড়ে না।
মাইলেই সরকারের ইসরায়েল ঘনিষ্ঠতা
প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মাইলেই ইসরায়েলের প্রবল সমর্থক এবং ইহুদি ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থের প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহী। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তিনি আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রনীতি পুনর্গঠন করছেন এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে দেশটির ‘কৌশলগত স্তম্ভ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
আর্জেন্টিনায় লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম ইহুদি জনগোষ্ঠী রয়েছে, যার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। পাশাপাশি সিরিয়া ও লেবানন থেকে আসা বড় আকারের অভিবাসী সম্প্রদায়ও এখানে বসবাস করে।
0 মন্তব্যসমূহ