Header Ads Widget

Responsive Advertisement

২০২৫ সালের শীত আগের বছরের চেয়ে বেশি ঠান্ডা হবে কেন? জানুন বিস্তারিত



ব্রাজিল বাংলা টিভি ডেস্ক:
🗓️ প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৫ | আপডেটেড: ২০ জুন ২০২৫

🌡️ ২০২৩-২৪ সালের তুলনায় এবারের শীত হতে পারে ব্যতিক্রম

ব্রাজিলের শীতকাল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খুব একটা তীব্র ঠান্ডা নিয়ে আসেনি। বিশেষ করে ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের শীতকালে, অনেক অঞ্চলেই ঠান্ডার চেয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে ছিল। তবে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন — ২০২৫ সালের শীত এই ধারার ব্যতিক্রম হতে পারে।

বিশেষ করে জুন মাসের শুরু থেকেই দেশের কিছু অঞ্চলে শীতের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এবছর ব্রাজিলে তুলনামূলক বেশি ঠান্ডা পড়তে পারে, যদিও ঐতিহাসিক গড়ের তুলনায় তা খুব বেশি নাও হতে পারে।


🔍 কেন বদলে যাচ্ছে শীতের রূপ?

জাতীয় আবহাওয়া ইনস্টিটিউট (ইনমেট)-এর আবহাওয়াবিদ ড্যানিয়েল ফেরেইরা জানিয়েছেন, এবছর শীতকালে ব্রাজিলের জলবায়ু স্বাভাবিকের কাছাকাছি থাকার সম্ভাবনা। তার প্রধান কারণ প্রশান্ত মহাসাগরের বর্তমান নিরপেক্ষ অবস্থা। অর্থাৎ, বর্তমানে এল নিনো বা লা নিনা কোনও অবস্থাই সক্রিয় নেই।

ফেরেইরা বলেন,

“এখন আমরা নিরপেক্ষতার মধ্যে আছি। এল নিনো বা লা নিনার কোনও সক্রিয়তা নেই। তাই বড় ধরনের অস্বাভাবিক গরম বা ঠান্ডা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে বছরের স্বাভাবিক শীতকালীন ঠান্ডা ঠিকই অনুভূত হবে।”


🌊 এল নিনো-লা নিনার প্রভাব ও বর্তমান অবস্থা

প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনো দেখা দিলে নিরক্ষরেখার কাছাকাছি সমুদ্রপৃষ্ঠের জল স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি উষ্ণ হয়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে দক্ষিণ আমেরিকার আবহাওয়ায়। অপরদিকে, লা নিনার সময় পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে নেমে আসে।

২০২৩ ও ২০২৪ সালের শীত ছিল এল নিনো দ্বারা প্রভাবিত, যার ফলে বেশিরভাগ অঞ্চলেই প্রচণ্ড ঠান্ডার বদলে গরম আবহাওয়া লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তবে এবছর সে রকম অবস্থার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।


❄️ ঠান্ডা প্রবাহ কি আসতে পারে?

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শীতকালে ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল অপেক্ষাকৃত শুষ্ক থাকে। তবে দক্ষিণ ও পাহাড়ি এলাকায় ঠান্ডা প্রবাহ আসার সম্ভাবনা থেকে যায়।

ফেরেইরা জানান,

“ব্রাসিলিয়ায় গত কয়েকদিনে আমি যেভাবে উষ্ণ পোশাক পরেছি, তা গত দুই বছর হয়নি। এর মানে হলো, এবছর শীতের প্রকোপ আগের বছরের তুলনায় একটু বেশি হওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, এপ্রিল থেকে শরৎকালের শুরুতে যেভাবে ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করেছে, তাতে বছরের বাকি সময়ে আরও একাধিক ঠান্ডা ঝড় প্রবাহিত হতে পারে।


🌍 জলবায়ু পরিবর্তনের ছাপ

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রার ওঠানামা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে শীতকালে তাপপ্রবাহ, দীর্ঘ খরা, হঠাৎ ঠান্ডা কিংবা অতিবৃষ্টি — সব কিছুই ঘটতে পারে।

ফেরেইরা বলেন,

“জলবায়ু পরিবর্তন আবহাওয়া ব্যবস্থা অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এতে করে আরও চরম ঘটনা ঘটছে। এটি এল নিনো বা লা নিনার মতো প্রাকৃতিক ঘটনার সাথে মিলিত হলে প্রভাব আরও বাড়ে।”


📊 আবহাওয়া বনাম জলবায়ু পূর্বাভাস

এখানে বোঝা জরুরি — আবহাওয়া পূর্বাভাস আর জলবায়ু পূর্বাভাস এক বিষয় নয়। আবহাওয়া পূর্বাভাস সাধারণত সর্বোচ্চ সাত দিনের জন্য নির্ভরযোগ্য থাকে।

অন্যদিকে, জলবায়ু পূর্বাভাস নির্ভর করে দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের আচরণের উপর। তিন মাসের জন্য জলবায়ুর প্রবণতা জানানো হয়, যা দিয়ে শীতকালীন মৌসুমের সার্বিক রূপরেখা আঁকা যায়।


📌 সারসংক্ষেপ

✅ ২০২৫ সালে ব্রাজিলে শীতকাল স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি ঠান্ডা হতে পারে।
✅ এল নিনো বা লা নিনা নেই — প্রশান্ত মহাসাগর বর্তমানে নিরপেক্ষ।
✅ দক্ষিণ ও পাহাড়ি অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা।
✅ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চরম আবহাওয়া আরও বাড়ার আশঙ্কা।


📢 শেষ কথা

অতএব, এ বছর শীতকাল আগের বছরের তুলনায় খানিকটা বেশি ঠান্ডা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বড় ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বা তুষারপাতের ঝুঁকি পুরোপুরি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ফলে পরবর্তী সপ্তাহগুলোর আবহাওয়া পূর্বাভাসের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ