Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ব্রাজিলে গণপরিবহনে ইলেকট্রিক বাস বাড়ানোর পরিকল্পনা


ব্রাজিল বাংলা টিভি ডেস্ক:

কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর লক্ষ্যে অনেক শহর ও দেশ ইলেকট্রিক যানবাহনের দিকে ঝুঁকছে। তবে ব্যয়বহুল হওয়ায় সবার পক্ষে তা সহজসাধ্য নয়। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, ব্রাজিল তাদের গণপরিবহনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ই-বাস দিয়ে পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।

লাতিন আমেরিকায় ইলেকট্রিক যানের সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে ব্রাজিল এগিয়ে রয়েছে। দেশটির বিভিন্ন শহর কর্তৃপক্ষ গণপরিবহনে ইলেকট্রিক বাস ব্যবহারের সম্ভাবনা পর্যালোচনা করছে।

সাও পাওলোর কাছাকাছি এলেট্রা কোম্পানির কারখানা অবস্থিত, যা কয়েক দশক ধরে ইলেকট্রিক ট্রলি বাস তৈরি করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক বাস উৎপাদন শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এসব বাস সাও পাওলোর রাস্তায় চলাচল করছে।

এলেট্রার নির্বাহী পরিচালক লেডা অলিভিয়েরা বলেন,

  "যদি আমরা এমন বাস তৈরি করি, যার দাম ডিজেল বাসের তুলনায় তিনগুণ বেশি হয় এবং যা ১৫ বছরের কম সময় টেকে, তাহলে এটি শুধু ব্রাজিল নয়, পুরো লাতিন আমেরিকার পরিবহন ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর হবে। তাই বাসগুলো অন্তত ১৫ বছর ব্যবহার উপযোগী হতে হবে।"

সাও পাওলোতে ই-বাসের গুরুত্ব

সাও পাওলো শহরে ইলেকট্রিক বাসের ব্যবহার আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০২২ সালের শেষের দিকে সেখানে নতুন ডিজেলচালিত বাস কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

সাও পাওলোর পরিবহন সচিব গিলমার মিরান্ডা জানান, 

"প্রতিদিন শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থায় প্রায় ১২ হাজার বাস চলে, যা গড়ে প্রায় ৭০ লাখ যাত্রী বহন করে।" 

শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাসের গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে, এর ২০% ইলেকট্রিক করার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

শব্দ ও বায়ু দূষণ কমানোর পাশাপাশি, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী ব্রাজিলের নির্ধারিত কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্য পূরণ করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চ্যালেঞ্জ ও ব্যয়

তবে এই পরিবর্তন বাস্তবায়ন সহজ নয়। ইলেকট্রিক বাসের উচ্চ ব্যয় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গিলমার মিরান্ডা জানান, 

"নতুন প্রযুক্তি হওয়ায় প্রথমদিকে বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেশি। মহামারির আগে ই-বাসের প্রাথমিক বিনিয়োগ ডিজেল বাসের দ্বিগুণ ছিল। এখন তা ডিজেলচালিত যানবাহনের তুলনায় তিনগুণের বেশি।"

এছাড়া, ই-বাস চালুর জন্য নতুন চার্জিং স্টেশন ও গ্যারেজ অবকাঠামো তৈরি করা জরুরি। মিরান্ডা বলেন, 

"গ্যারেজে প্রয়োজনীয় সবকিছুর ব্যবস্থা রাখতে হবে, যেভাবে ডিজেল বাসের জন্য আগে থেকেই জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়।"

স্থানীয় উৎপাদন ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

জার্মানির মার্সেডেজ বেঞ্জ ইতোমধ্যে ব্রাজিলের এলেট্রা কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে এবং ইলেকট্রিক বাসের চেসিস তৈরি করছে। তাদের তৈরি ২৫০টির বেশি চেসিস বর্তমানে সাও পাওলোর রাস্তায় চলছে।

মার্সেডেজ বেঞ্জ লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের প্রধান আখিম পুশার্ট বলেন,

  "গণপরিবহনের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে এবং ২০৩০ সাল পর্যন্ত এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা করছি। একটি ইলেকট্রিক বাস প্রায় ৫০টি ব্যক্তিগত গাড়ির সমতুল্য যাত্রী পরিবহন করতে পারে, যা ভবিষ্যতে শহরগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হতে পারে।"

যেভাবে ব্যক্তিগত ইলেকট্রিক যানবাহন জনপ্রিয় হচ্ছে, ভবিষ্যতে ই-বাসের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও স্থানীয় সমাধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ